"বিভিন্ন ধরনের ডাইস নিয়ে বিস্তারিত"
বস্ত্র শিল্পে ডাইসঃ
ডাইস বা রং বলতে ঐ সমস্ত দ্রব্যকে বুঝায় , যার দ্বারা ফেব্রিক টিকে চাহিদানুযায়ী রাঙিয়ে তোলা যায়। মানুষের মন বৈচিত্র পিয়াসী। যখন তারা বস্ত্র পরিধান করতে শিখল , তার সাথে সাথেই , বস্ত্রটিকে সাধারণ থেকে পার্থক্য করার জন্য , ডাইস এর খোঁজ পড়ল। এভাবেই তারা বিভিন্ন গাছের বাঁকল, কষ, বিচি ইত্যাদি চুর্ণ করে দ্রবণ তৈরী করে উক্ত দ্রবণে ফেব্রিক কে ভিজিয়ে রাঙিয়ে নিল। এভাবেই শুরু হলো আজকের রঞ্জণ বা ডাইং পদ্ধতি।
ফেব্রিকের ডাইস হিসেবে ব্যবহারের জন্য দ্রব্যটির প্রধান তিনটি গুন থাকতে হবে, তা হলো-
১। পানিতে দ্রবণীয় ডাইসটির অবশ্যই বস্ত্রের ফাইবারের ভিতর প্রবেশ করার ধর্ম থাকতে হবে, যা হাইড্রোজেন বন্ধন বা বৈদ্যুতিক আকর্ষণের মাধ্যমে বা যে কোন উপায়ে হউক ।
২। পানিতে অদ্রবণীয় ডাইস সমূহ ফেব্রিকের সাথে লেগে থাকার গুন থাকতে হবে।
৩। ফেব্রিকের সাথে ডাইস অনুপ্রবেশের পর তা যেন বের হয়ে না আসতে পারে।
রঞ্জন দ্রব্যের এই তিনটি গুন না থাকলে থাকে ডাইস বলা যাবে না।
ডাইস এর শ্রেণী বিভাগঃ
১. ডাইরেক্ট ডাইস
২. ভ্যাট ডাইস
৩. এজোইক ডাইস
৪. এসিড ডাইস
৫. রিয়েক্টিভ ডাইস
৬. ডিসপার্স ডাইস
৭. সালফার ডাইস
ডাইরেক্ট ডাইসঃ
ডাইরেক্ট ডাইস পানিতে দ্রবণীয় এবং ওভেন ফেব্রিক ঐ পানিতে আসলে ডাইস এজেন্ট সমূহ দ্রুত পানি থেকে উক্ত ফেব্রিকের দিকে অধিক আকর্ষিত হয়ে ফেব্রিকের ফাইবারে প্রবেশ ঘটে। অর্থাৎ এই সমস্ত ডাইসের এরোমেটিক সালফিউরিক এসিডের সোডিয়াম লবণ সমূহ ফাইবারের সেলুলোজ কর্তৃক আকর্ষিত হয়ে পানি ত্যাগ করে, সরাসরি ফেব্রিকে প্রবেশ করে।
ইয়ার্ন বা ফেব্রিক ডাইং করার সময় এর অনুগুলো ফাইবারের ভিতর প্রবেশ করে। যখন দ্রবন উষ্ণ করা হয় , তখন এর ক্রিয়া আরো বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া এই সময় প্রভাবক হিসেবে দ্রুত ও অধিক ক্রিয়া সম্পাদনের জন্য সাধারণ লবন বা গ্লবার লবন যোগ করা হয়, এই সমস্ত ডাইস এর ওয়াশিং ফাস্টনেস প্রতিরোধ করার ক্ষমতা অনেক কম। বিশেষত গরম সাবান দ্রবণে ধোয়ার সময় ফেব্রিক হতে ডাইস তাড়াতাড়ি বের হয়ে আসে। ফলে এর স্থায়িত্ব বৃদ্ধির জন্য আফটার ট্রিটমেন্ট করতে হয়।
ভ্যাট ডাইসঃ
ওভেন ফেব্রিক ডাইস করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও দামী ডাইসটি হলো ভ্যাট ডাইস। এর বহুমুখী ফাষ্টনেস গুনের জন্য , বহু যুগ ধরে এটা ওভেন ফেব্রিকে প্রধান ডাইস হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই ভ্যাট ডাইস পানিতে অদ্রবণীয় বলে, এটাকে হাইড্রোস (সোডিয়াম হাইড্র-অক্সাইড ) এবং কষ্টিক (সোডিয়াম হাইড্র-সালফাইড ) সহযোগে দ্রবীভুত করা হয়। এটাকে ভ্যাটিং বলে। ভ্যাট দ্রবনে ফেব্রিক বা ইয়ার্ন ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা ক্রিয়া করে বাতাসে মেলে দেওয়া হয়, বাতাসের অক্সিজেনের স্পর্শে আসার জন্য ইহাকে অক্সিডাইজেশন বলে। ডাইসটি তখন ফুটে উঠে। এছাড়াও তরল ভ্যাট পাওয়া যায়, যা প্রিন্ট করার জন্য অধিক ব্যবহৃত হয়।
এজোইক ডাইসঃ
এই শ্রেণীর ডাইস অন্যান্য গুলোর মত রেডি মেড ডাইস নয় । এগুলো ন্যাপথল এবং বেস হিসেবে , আলাদা আলাদা ভাবে বাজারজাত করা হয়। ফেব্রিক কে ডাইং করার জন্য দুইটি ধাপ রয়েছে। ফেব্রিক কে ন্যাপথল দ্রবনে , অতঃপর বেস দ্রবণে ভেজানো হয় যাকে ন্যাপথলের ডাই এজোটাইজ , বেস এর কাপ্লিং বলা হয়। ন্যাপথল ডাইস পানিতে অদ্রবণীয় । তাই এটাকে হাইড্রোস সহযোগে উচ্চ তাপে পানিতে দ্রবীভুত করা হয়। ডাইরেক্ট ডাইস এর মত তখন তা ন্যাপথলেট ওভেন ফেব্রিকের ফাইবারের সেলুলোজ দ্বারা আকৃষ্ট হয়। সাধারণ লবন ব্যাবহার করে এই প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করা হয়। এই প্রক্রিয়াটি সাধারণ তাপমাত্রায় করা হয়।
এসিড ডাইসঃ
সাধারণত উল, রেশম, নাইলন ইত্যাদি ইয়ার্ন বা ফেব্রিক কে ডাইং করার জন্য , এসিড ডাইস ব্যবহার করা হয়। ডাইস দ্রবণে সালফিউরিক , এসিটিক বা ফরমিক এসিড যুক্ত থাকে। এই ডাইস বহু ধরনের হয়। এই ডাইসটি প্রোটিন ফাইবার সমূহের এমিনো গ্রুপ এর সাথে , অম্লীয় দ্রবণের উপস্থিতিতে ডাইসটি সংযুক্ত হয়। এসিডের উপস্থিতিতে প্রোটিনের এমিনো গ্রুপটি ধনাত্বক চার্জ সমৃদ্ধ হয়, যা ক্যাটায়ন দ্বারা প্রভাবিত। ঐ ক্যাটায়ন সমূহ ডাইস এর অনুর এনায়নের সাথে সংযোগের মাধ্যমে ডাইস কৃত হয়। এসিডের ডাইস যত ঘন হবে, উক্ত প্রোটিন ফাইবার সমূহে ডাইস গ্রহণ করার ক্ষমতা তত বৃদ্ধি পাবে।
বেসিক ডাইসঃ
সব ধরনের ডাইস এর মধ্যে সবচেয়ে উজ্জ্বলতম ডাইস হচ্ছে বেসিক ডাইস কিন্তু ইহার লাইট ফাষ্টনেস খুবই কম। উল ও রেশম ফাইবারের কার্বোক্সাইল গ্রুপের সাথে বেসিক ডাইস এর আসক্তি অধিক। কার্বোক্সাইল গ্রুপ ঋনাত্বক আয়নে রূপান্তরিত হয়ে , ডাইস এর ক্যাটায়ন সমুহকে আকৃষ্ট করে , ফলে উচ্চ মানের ফাষ্টনেস সম্পন্ন ডাইস এর সৃষ্টি হয়।
এই ডাইস এর সেলুলোজ জাতীয় ফাইবারের প্রতি কোন আসক্তি নেই, তাই তুলার তৈরী ফেব্রিক ডাইং করার জন্য , ফেব্রিকটিকে প্রথমে ট্যনিক এসিডের মত কোন মডারেন্ট দ্রবণে ভিজিয়ে নিয়ে টারটারিক যৌগের মাধ্যমে তা স্থায়ী করে নিতে হয়। অতঃপর ফেব্রিক টিকে বেসিক ডাইস এর সাহায্যে রঞ্জিত করা হয়।
রিয়েক্টিভ ডাইসঃ
১৯৫৬ সালে যুক্তরাজ্যের ইম্পেরিয়াল ক্যামিক্যাল ইন্ডাষ্ট্রিজ এর রাসায়নিকবিদগণ ডাইরেক্ট ডাইস এর উন্নতি সাধনকল্পে এই ডাইস আবিষ্কার করেন। অন্যান্য ডাইস এর ক্ষেত্রে যেমন তা ফাইবার বা ফেব্রিকের অভ্যন্তরে বা বহিরাবণে প্রবেশ করে , তাকে আকড়িয়ে রাখে, এই রিয়েক্টিক ডাইস এর ক্ষেত্রে তা হয় না। এখানে এই ডাইস এর অনু ফাইবারের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে ফাইবারের অনু –পরমানুর সাথে , ক্ষারের উপস্থিতিতে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে ফাইবারেরই একটি অংশ হয়ে দাড়ায়। “প্রসিয়ন “ নামে এই ডাইস সর্বপ্রথম বাজারজাত করা হয় । পরবর্তীকালে ব্যাপক গবেষণা ও পর্যালোচনা করে , এই ডাইস এর আর উন্নতি সাধন হতে থাকে। যা ইয়ার্ন ফেব্রিকসহ , নাইলন, সিল্ক, উল ইত্যাদি ফাইবারের ফেব্রিক সমুহ কে ডাইং করতে সক্ষম হয়।
ডিসপার্স ডাইসঃ
এই ডাইস সাধারণ পানিতে অদ্রবণীয় , উষ্ণ পানিতে কিছু মাত্রায় দ্রবণীয়। পলিষ্টার, নাইলন, সেলুলোজ এসিটেড ফাইবার নির্মিত ফেব্রিককে ডাইং করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এই ডাইস এর সাথে ডিসপার্সিং দ্রব্য মিশ্রিত করা হয়, অধিক উত্তাপে (১৩০-২০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস ) ডাইস এর ক্ষুদ্র অনুগুলোকে পলিষ্টার, নাইলন, সেলুলোজ এসিটেড ইত্যাদি ফাইবার সমূহের ভিতরে প্রবেশ করিয়ে দেয়। আরেকটি পদ্ধতি রয়েছে , যাকে ক্যারিয়ার পদ্ধতি বলে। এক্ষেত্রে ফুটন্ত (১০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস ) ডিসপার্স দ্রবণ থেকে , ডাইস ক্যারিয়ারের মাধ্যমে ফাইবারের ভিতরে প্রবেশ করে। ডাইস করার সময় ফাইবার সমূহ ১০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপেই ফুলে উঠে। আর এই অনুগুলো সেই সুযোগে ফাইবারের ভিতরে প্রবেশ করে। ডাইস এর পর ওয়াশ করে নিলেই ডাইস স্থায়ী হয়। এই সমস্ত ডাইস এর ওয়াশ ফাষ্টনেস ক্ষমতা অনেক বেশি।
সালফার ডাইসঃ
সালফার ডাইস টেক্সটাইল এ বহুল পরিচিত একটি ডাইস। সালফার ডাইস পানিতে অদ্রবণীয়। সালফার ডাইসকে পানিতে দ্রবীভুত করতে বিভিন্ন ধরনের রিডিউসিং এজেন্ট ব্যবহার করতে হয়। সাধারণত ব্ল্যাক শেড তৈরি করতে এই ডাইস ব্যবহার করতে হয়। ডাইস এর স্থায়ীত্বের জন্য অক্সিডাইজেশনের প্রয়োজন হয়। কটন, ভিসকস ফাইবারের জন্য এই ডাইস ব্যবহার করা হয়। অন্যান্য ডাইসের তুলনায় এই ডাইসের দাম কিছুটা কম।
বস্ত্র শিল্পে ডাইসঃ
ডাইস বা রং বলতে ঐ সমস্ত দ্রব্যকে বুঝায় , যার দ্বারা ফেব্রিক টিকে চাহিদানুযায়ী রাঙিয়ে তোলা যায়। মানুষের মন বৈচিত্র পিয়াসী। যখন তারা বস্ত্র পরিধান করতে শিখল , তার সাথে সাথেই , বস্ত্রটিকে সাধারণ থেকে পার্থক্য করার জন্য , ডাইস এর খোঁজ পড়ল। এভাবেই তারা বিভিন্ন গাছের বাঁকল, কষ, বিচি ইত্যাদি চুর্ণ করে দ্রবণ তৈরী করে উক্ত দ্রবণে ফেব্রিক কে ভিজিয়ে রাঙিয়ে নিল। এভাবেই শুরু হলো আজকের রঞ্জণ বা ডাইং পদ্ধতি।
ফেব্রিকের ডাইস হিসেবে ব্যবহারের জন্য দ্রব্যটির প্রধান তিনটি গুন থাকতে হবে, তা হলো-
১। পানিতে দ্রবণীয় ডাইসটির অবশ্যই বস্ত্রের ফাইবারের ভিতর প্রবেশ করার ধর্ম থাকতে হবে, যা হাইড্রোজেন বন্ধন বা বৈদ্যুতিক আকর্ষণের মাধ্যমে বা যে কোন উপায়ে হউক ।
২। পানিতে অদ্রবণীয় ডাইস সমূহ ফেব্রিকের সাথে লেগে থাকার গুন থাকতে হবে।
৩। ফেব্রিকের সাথে ডাইস অনুপ্রবেশের পর তা যেন বের হয়ে না আসতে পারে।
রঞ্জন দ্রব্যের এই তিনটি গুন না থাকলে থাকে ডাইস বলা যাবে না।
ডাইস এর শ্রেণী বিভাগঃ
১. ডাইরেক্ট ডাইস
২. ভ্যাট ডাইস
৩. এজোইক ডাইস
৪. এসিড ডাইস
৫. রিয়েক্টিভ ডাইস
৬. ডিসপার্স ডাইস
৭. সালফার ডাইস
ডাইরেক্ট ডাইসঃ
ডাইরেক্ট ডাইস পানিতে দ্রবণীয় এবং ওভেন ফেব্রিক ঐ পানিতে আসলে ডাইস এজেন্ট সমূহ দ্রুত পানি থেকে উক্ত ফেব্রিকের দিকে অধিক আকর্ষিত হয়ে ফেব্রিকের ফাইবারে প্রবেশ ঘটে। অর্থাৎ এই সমস্ত ডাইসের এরোমেটিক সালফিউরিক এসিডের সোডিয়াম লবণ সমূহ ফাইবারের সেলুলোজ কর্তৃক আকর্ষিত হয়ে পানি ত্যাগ করে, সরাসরি ফেব্রিকে প্রবেশ করে।
ইয়ার্ন বা ফেব্রিক ডাইং করার সময় এর অনুগুলো ফাইবারের ভিতর প্রবেশ করে। যখন দ্রবন উষ্ণ করা হয় , তখন এর ক্রিয়া আরো বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া এই সময় প্রভাবক হিসেবে দ্রুত ও অধিক ক্রিয়া সম্পাদনের জন্য সাধারণ লবন বা গ্লবার লবন যোগ করা হয়, এই সমস্ত ডাইস এর ওয়াশিং ফাস্টনেস প্রতিরোধ করার ক্ষমতা অনেক কম। বিশেষত গরম সাবান দ্রবণে ধোয়ার সময় ফেব্রিক হতে ডাইস তাড়াতাড়ি বের হয়ে আসে। ফলে এর স্থায়িত্ব বৃদ্ধির জন্য আফটার ট্রিটমেন্ট করতে হয়।
ভ্যাট ডাইসঃ
ওভেন ফেব্রিক ডাইস করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও দামী ডাইসটি হলো ভ্যাট ডাইস। এর বহুমুখী ফাষ্টনেস গুনের জন্য , বহু যুগ ধরে এটা ওভেন ফেব্রিকে প্রধান ডাইস হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই ভ্যাট ডাইস পানিতে অদ্রবণীয় বলে, এটাকে হাইড্রোস (সোডিয়াম হাইড্র-অক্সাইড ) এবং কষ্টিক (সোডিয়াম হাইড্র-সালফাইড ) সহযোগে দ্রবীভুত করা হয়। এটাকে ভ্যাটিং বলে। ভ্যাট দ্রবনে ফেব্রিক বা ইয়ার্ন ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা ক্রিয়া করে বাতাসে মেলে দেওয়া হয়, বাতাসের অক্সিজেনের স্পর্শে আসার জন্য ইহাকে অক্সিডাইজেশন বলে। ডাইসটি তখন ফুটে উঠে। এছাড়াও তরল ভ্যাট পাওয়া যায়, যা প্রিন্ট করার জন্য অধিক ব্যবহৃত হয়।
এজোইক ডাইসঃ
এই শ্রেণীর ডাইস অন্যান্য গুলোর মত রেডি মেড ডাইস নয় । এগুলো ন্যাপথল এবং বেস হিসেবে , আলাদা আলাদা ভাবে বাজারজাত করা হয়। ফেব্রিক কে ডাইং করার জন্য দুইটি ধাপ রয়েছে। ফেব্রিক কে ন্যাপথল দ্রবনে , অতঃপর বেস দ্রবণে ভেজানো হয় যাকে ন্যাপথলের ডাই এজোটাইজ , বেস এর কাপ্লিং বলা হয়। ন্যাপথল ডাইস পানিতে অদ্রবণীয় । তাই এটাকে হাইড্রোস সহযোগে উচ্চ তাপে পানিতে দ্রবীভুত করা হয়। ডাইরেক্ট ডাইস এর মত তখন তা ন্যাপথলেট ওভেন ফেব্রিকের ফাইবারের সেলুলোজ দ্বারা আকৃষ্ট হয়। সাধারণ লবন ব্যাবহার করে এই প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করা হয়। এই প্রক্রিয়াটি সাধারণ তাপমাত্রায় করা হয়।
এসিড ডাইসঃ
সাধারণত উল, রেশম, নাইলন ইত্যাদি ইয়ার্ন বা ফেব্রিক কে ডাইং করার জন্য , এসিড ডাইস ব্যবহার করা হয়। ডাইস দ্রবণে সালফিউরিক , এসিটিক বা ফরমিক এসিড যুক্ত থাকে। এই ডাইস বহু ধরনের হয়। এই ডাইসটি প্রোটিন ফাইবার সমূহের এমিনো গ্রুপ এর সাথে , অম্লীয় দ্রবণের উপস্থিতিতে ডাইসটি সংযুক্ত হয়। এসিডের উপস্থিতিতে প্রোটিনের এমিনো গ্রুপটি ধনাত্বক চার্জ সমৃদ্ধ হয়, যা ক্যাটায়ন দ্বারা প্রভাবিত। ঐ ক্যাটায়ন সমূহ ডাইস এর অনুর এনায়নের সাথে সংযোগের মাধ্যমে ডাইস কৃত হয়। এসিডের ডাইস যত ঘন হবে, উক্ত প্রোটিন ফাইবার সমূহে ডাইস গ্রহণ করার ক্ষমতা তত বৃদ্ধি পাবে।
বেসিক ডাইসঃ
সব ধরনের ডাইস এর মধ্যে সবচেয়ে উজ্জ্বলতম ডাইস হচ্ছে বেসিক ডাইস কিন্তু ইহার লাইট ফাষ্টনেস খুবই কম। উল ও রেশম ফাইবারের কার্বোক্সাইল গ্রুপের সাথে বেসিক ডাইস এর আসক্তি অধিক। কার্বোক্সাইল গ্রুপ ঋনাত্বক আয়নে রূপান্তরিত হয়ে , ডাইস এর ক্যাটায়ন সমুহকে আকৃষ্ট করে , ফলে উচ্চ মানের ফাষ্টনেস সম্পন্ন ডাইস এর সৃষ্টি হয়।
এই ডাইস এর সেলুলোজ জাতীয় ফাইবারের প্রতি কোন আসক্তি নেই, তাই তুলার তৈরী ফেব্রিক ডাইং করার জন্য , ফেব্রিকটিকে প্রথমে ট্যনিক এসিডের মত কোন মডারেন্ট দ্রবণে ভিজিয়ে নিয়ে টারটারিক যৌগের মাধ্যমে তা স্থায়ী করে নিতে হয়। অতঃপর ফেব্রিক টিকে বেসিক ডাইস এর সাহায্যে রঞ্জিত করা হয়।
রিয়েক্টিভ ডাইসঃ
১৯৫৬ সালে যুক্তরাজ্যের ইম্পেরিয়াল ক্যামিক্যাল ইন্ডাষ্ট্রিজ এর রাসায়নিকবিদগণ ডাইরেক্ট ডাইস এর উন্নতি সাধনকল্পে এই ডাইস আবিষ্কার করেন। অন্যান্য ডাইস এর ক্ষেত্রে যেমন তা ফাইবার বা ফেব্রিকের অভ্যন্তরে বা বহিরাবণে প্রবেশ করে , তাকে আকড়িয়ে রাখে, এই রিয়েক্টিক ডাইস এর ক্ষেত্রে তা হয় না। এখানে এই ডাইস এর অনু ফাইবারের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে ফাইবারের অনু –পরমানুর সাথে , ক্ষারের উপস্থিতিতে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে ফাইবারেরই একটি অংশ হয়ে দাড়ায়। “প্রসিয়ন “ নামে এই ডাইস সর্বপ্রথম বাজারজাত করা হয় । পরবর্তীকালে ব্যাপক গবেষণা ও পর্যালোচনা করে , এই ডাইস এর আর উন্নতি সাধন হতে থাকে। যা ইয়ার্ন ফেব্রিকসহ , নাইলন, সিল্ক, উল ইত্যাদি ফাইবারের ফেব্রিক সমুহ কে ডাইং করতে সক্ষম হয়।
ডিসপার্স ডাইসঃ
এই ডাইস সাধারণ পানিতে অদ্রবণীয় , উষ্ণ পানিতে কিছু মাত্রায় দ্রবণীয়। পলিষ্টার, নাইলন, সেলুলোজ এসিটেড ফাইবার নির্মিত ফেব্রিককে ডাইং করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এই ডাইস এর সাথে ডিসপার্সিং দ্রব্য মিশ্রিত করা হয়, অধিক উত্তাপে (১৩০-২০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস ) ডাইস এর ক্ষুদ্র অনুগুলোকে পলিষ্টার, নাইলন, সেলুলোজ এসিটেড ইত্যাদি ফাইবার সমূহের ভিতরে প্রবেশ করিয়ে দেয়। আরেকটি পদ্ধতি রয়েছে , যাকে ক্যারিয়ার পদ্ধতি বলে। এক্ষেত্রে ফুটন্ত (১০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস ) ডিসপার্স দ্রবণ থেকে , ডাইস ক্যারিয়ারের মাধ্যমে ফাইবারের ভিতরে প্রবেশ করে। ডাইস করার সময় ফাইবার সমূহ ১০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপেই ফুলে উঠে। আর এই অনুগুলো সেই সুযোগে ফাইবারের ভিতরে প্রবেশ করে। ডাইস এর পর ওয়াশ করে নিলেই ডাইস স্থায়ী হয়। এই সমস্ত ডাইস এর ওয়াশ ফাষ্টনেস ক্ষমতা অনেক বেশি।
সালফার ডাইসঃ
সালফার ডাইস টেক্সটাইল এ বহুল পরিচিত একটি ডাইস। সালফার ডাইস পানিতে অদ্রবণীয়। সালফার ডাইসকে পানিতে দ্রবীভুত করতে বিভিন্ন ধরনের রিডিউসিং এজেন্ট ব্যবহার করতে হয়। সাধারণত ব্ল্যাক শেড তৈরি করতে এই ডাইস ব্যবহার করতে হয়। ডাইস এর স্থায়ীত্বের জন্য অক্সিডাইজেশনের প্রয়োজন হয়। কটন, ভিসকস ফাইবারের জন্য এই ডাইস ব্যবহার করা হয়। অন্যান্য ডাইসের তুলনায় এই ডাইসের দাম কিছুটা কম।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন